আমার খুব ইচ্ছা একদিন এই রোবোটিক জীবন ছেড়ে কয়েকমাসের জন্য আত্মগোপনে চলে যাবো। কেউ কোনো খোজ পাবে না, চুল দাড়ি বড় করে চোখে চশমা পরে গায়ে একটা চাদর জড়াবো। হাতে আমার ডায়েরী থাকবে। আমি লিখালিখি করবো। সিগারেট যদি খেতে পারতাম তাহলে মন্দ হতো না যদিও সেইরকম কোনো সুযোগ নেই । রাত জেগে চাদের দিকে একমনে তাকিয়ে থাকবো। বৃষ্টি দেখবো, বৃষ্টিতে ভিজবো। খোলা মাঠে শুয়ে আকাশ দেখবো। তারা দেখবো । তবে এইসব ফ্যান্টাসি কয়েক মাসের জন্যই ভালো লাগে এরপর আবার এই যান্ত্রিক জীবনে ব্যাক করবো, নিজের আইফোন হাতে নিয়ে পার্ট নিবো। কানে এয়ারপোডস লাগিয়ে গান শুনবো । সবাই জিজ্ঞেস করবে আমি কোথায় ছিলাম আমি তাদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি হাসবো । কেউ জানবে না কোথায় ছিলাম, কেমন ছিলাম ।
আমার কখনোই ৯-৫ টা চাকরী করার মতো মানসিকতা ছিলো না। পরিস্থিতি চাপে এখন হয়তো করা লাগছে । আমাদের অনেক ইচ্ছা আমরা নিজেদের পরিস্থিতির কারণে কোরবানী দেই। দেওয়া লাগে কারণ জীবনে আপনি যাই চাইবেন তাই যদি পেয়ে যান তাহলে জীবনের মজা আপনি পাবেন না। এই কথা আমি নিজের স্বান্তনা দেওয়ার জন্য আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিদিন বলি।
মানুষের জীবনে দুইটা অধ্যায় থাকে। এক অধ্যায়ে আপনার আশেপাশে অনেক মানুষ থাকে এবং আপনি এই জিনিসটা খুব ইঞ্জয় করেন দ্বিতীয় অধ্যায়ে আপনি একটু একা হয়ে পড়বেন এবং মানুষের সঙ্গ আপনার ভালোও লাগবে না। এই দুইটা অধ্যায় সবার জীবনেই থাকে। আমি এখন দ্বিতীয় অধ্যায়ে এবং আমি খুব এঞ্জয় করি এই জিনিসটা। অফিস – বাসা – ক্লাস এই তিনটা শেষ করে আমি বাসায় গেম খেলি । এরপর ঘুমানোর চেষ্টা করি । আমার ইনবক্সে মেসেজ থাকলেও আমার রিপ্লাই দিতে খুব একটা ইচ্ছা হয় না । আমি নোটিফিকেশন বার থেকে দেখি এবং চুপ করে থাকি । কয়েকদিন আগে আরেকটা মজার জিনিস আবিষ্কার করলাম যে রিড রিসিপ্টস নামে একটা অপশন আছে যেটা অফ করে রাখলে আপনি মেসেজ পড়েছেন সেটা বোঝা যায় না । এখন সেটা হওয়াতে আমার মতো মানুষদের খুব সুবিধা হয়েছে। চুপচাপ মেসেজ রিড করে রিপ্লাই না দিলে কেউ রাগ করে না । যদিও আমার আম্মাজান রাগ করেন আমি তার মেসেজ দেখিনা বলে সেজন্য তার প্রতেক মেসেজে রিএক্ট দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করি যে আমি তার মেসেজ পড়েছি।
আমি এখানে লেখালেখিটা খুবই এঞ্জয় করি । এখানে লেখে আমি কাউকে বিরক্ত করি না । সবাই শুধু হাসতে চায়, কারো ভিতরের কথা কেউ শুনতে চায় না। এইসব আজাইরা জিনিস ফেসবুকে লেখালেখির জন্য অনেকে আমাকে আনফ্রেন্ড করে দিয়েছে এবং সেটার জন্য আমি তাদের দোষ দেই না । কেই বা চাইবে নিজের ডিপ্রেসড লাইফের উপর আরেকজনের এসব আজাইরা জিনিস পড়ে আরো ডিপ্রেসড হওয়ার। আর কাউকে জোর করে নিজের লেখা পড়ানোর কিংবা বিরক্ত করার দরকারই বা কি? তবে অবাক হলাম আমি এই ওয়েবসাইটের কথা কাউকে না বললেও অনেকে আসে আর মজার বিষয় হচ্ছে কে আসে সেটা আমি বুঝতে পারি না, বুঝতে পারলে হয়তো ধন্যবাদ দিতাম। কেউ তো আছে যে নিজের ইচ্ছায় আমার লেখাগুলা পড়ে। আপনাদের কেয়া কস্মেটিক্সের পক্ষ্ থেকে পরিবেশবান্ধব গাছ উপহার রেখে দিলাম।
চলবে......
No comments:
Post a Comment