- আকাশ তো ভালোই মেঘলা। বৃষ্টি নামবে, এখন বাইর হবা?
ভাইয়া কিছুক্ষন আকাশের দিকে তাকায় থাকলো। উত্তর দিলো না।
- এখন বাইর হইয়ো না, বৃষ্টিতে ভিজলে ঠান্ডা লাগবে। এমনেই শ্বাসকষ্ট আছে তোমার।
ভাইয়া এখনো আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। মুচ্কি হাসলো। এরপর আমার দিকে তাকালো।
- এখন আর আমার ঠান্ডা লাগে নারে, কতো বৃষ্টিতে ভিজলাম।
- একটু পরে বের হও।
ভাইয়া প্যান্ট হাতে নিলো পড়ার জন্য। কি মনে করে যেনো আবার রেখে দিলো। বিছানায় বসলো। ভাইয়ার বৃষ্টিতে ঘুমানো খুব পছন্দ। জানতাম এখনি শুয়ে পড়বে। হলোও তাই। আম্মা এক পাশে ঘুমায় ছিলো, ভাইয়া আম্মার পাশেই শুয়ে পড়লো। অনেক বছর পর আমরা ৩ জন একসাথে। সেই ছোটবেলায় আমার ডান পাশে আম্মা ঘুমাতো আর বাম পাশে ভাইয়া। আমিও শুয়ে পড়লাম। বৃষ্টির কারণে অনেকটা ঠান্ডা লাগতেছে। আমি দুইজনকেই কাঁথা দিয়ে ঢেকে দিলাম। কি মনে করে ভাইয়ার পাশে গিয়ে শুইলাম। ভাইয়ার মাথাটা বুকে জড়ায় নিলাম। ভাইয়াকে জড়ায় নেওয়ার পর আমার চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়তে লাগলো। কিন্তু আমার চোখের পানি কেউ দেখতেছে না. আমি ততক্ষনে বুঝে গেলাম যে আমি স্বপ্ন দেখতেছি। আরো জোর করে জড়ায় ধরলাম ভাইয়াকে। মনে হলো যদি আমি ছেড়ে দেই আমার স্বপ্নটা ভেঙে যাবে। ভাইয়াও দেখলাম মাথাটা সামনে আগায়ে দিলো। আমি কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলাম "আল্লাহ এই স্বপ্নটা ভেঙে দিয়েন না।" কিন্তু ভেঙে গেলো। আবার আমি একা হয়ে গেলাম।
এমন না যে আমি ভাইয়াকে কখনো দেখি না স্বপ্নে। গত ছয় বছরে আমি অগণিতবার ভাইয়াকে স্বপ্নে দেখেছি। আমি মানুষটা খুব শক্ত কিন্তু আজকে কেন যেন খুব ফাঁকা লাগতেছে। মনে হইতেছে ভাইয়া মনে হয় বিদায় নিয়ে গেলো আর কখনো স্বপ্নে আসবে না। আমার খুব ইচ্ছা ভাইয়াকে আবার জড়ায় ধরে রাখার। আমি জানিনা আল্লাহ আমার এই ইচ্ছা কখনো পূরণ করবে কিনা। কিন্তু আমি আশা দেখি। হয়তো কখনো সামনা সামনি দেখবো তখন হয়তো স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
No comments:
Post a Comment