আজকে অনেকদিন পর আমি যে অনুভুতিলেস মানুষে পরিণত হয়েছি তার আরো একবার প্রমান পেলাম। আমার এক ক্লোজ ফ্রেন্ডের টেক্সট।
- তোর সাথে কথা আছে
- কি রিলেটেড
- ঘুমায় যাইস না। একটা কাজ করতেছি। করে ফোন দিচ্ছি।
- বলতো কি রিলেটেড, ঘুমায় যাইতেও পারি। চোখ অফ হয়ে আসতেছে
- ভাই! আমি কাদতেছি
একটু হকচকিয়ে গেলাম।
- আছি আমি, আয় তুই।
৫-১০ মিনিট পরে বন্ধুর ফোন, ফোন রিসিভ করার পর বাচ্চা মানুষের মতো কাদা শুরু করলো। আমি এইসবে খুব একটা অভ্যস্ত না। এইরকম ভাবে আমি শেষ কাদছিলাম ৭ বছর আগে। যখন আমি আমার জানের চেয়ে প্রিয় মানুষকে হারাই। সো স্বভাবতই ভিতরটা গুমরে উঠলো।
- কি হইছে
ধরা যাক আমার বন্ধুটার নাম নিলয়।
নিলয় বাচ্চাদের মতো কেদেই চলতেছে।
- আরে বাল, বলবি তো কি হইছে?
- তোর রিয়ার (ছদ্দনাম) কথা মনে আছে?
নামটা পরিচিত,কিন্তু মনে করতে একটু সময় লাগলো।
- এটা কি ওই (একটা) ইউনিভার্সিটির না?
- হ্যা
- কি হইছে?
- ও আমার সাথে চিট করছে, ওর আরেকজনের সাথেও রিলেশন আছে। আমি মাত্র জানতে পারলাম।
কেউ একজন তার মন থেকে কাউকে পছন্দ করলে ওর এতটা খারাপ লাগবেই এই সিচুয়েশনে। লাগাটাই খুব স্বাভাবিক। কিন্তু আমি যে অনুভুতি শুন্য আমার কাছে এই রিজনে এভাবে কান্না করাটা খুবই বেখাপ্পা লাগলো। কোনো।মতে নিজেকে এই কোয়েশ্চন করা থেকে বিরত থাকলাম "যে এটা কোনো কান্না করার রিজন হইলো?"
মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনলাম। আমার বন্ধুর মনটা খুবই নরম। জানালো ৩ বছর ধরে এই মেয়েকে পছন্দ করে, বিদেশ পর্যন্ত যায় নাই ওই মেয়ের জন্যই। আজকে জানতে পারলো ওই মেয়ে আরেকজনের সাথে রিলেশনে ছিলো।
আমার জীবনের গল্পে এগুলোর জন্য কোনো খারাপ লাগা নাই। সুতরাং ওকে স্বান্তনা দেওয়ার জন্য আমি খুবই খারাপ একটা চয়েস। ইমোশনাল মোমেন্টে বাস্তবতা নিয়ে কথা বলা যায় না। কারণ বাস্তবতা বুঝলে মানুষ কখনো ইমোশনাল হয় না। আর ইমোশনাল হলে কেউ বাস্তবতা বুঝতে চায় না।
আমার জীবনে কিছু রুল আছে যেটা আমি কখনো ভাঙিনা।আমি কাউকে আমার লাইফে থাকার জন্য জোর করি নাই। করি নাই বলতে করি নাই। বুক ফেটে গেলেও বলি নাই। আমার সাইকোলজি এভাবে কাজ করে, "আমি চেষ্টা করবো মানুষকে রাখার, সর্বোচ্চ চেষ্টা। কিন্তু তারপরেও কেউ থাকবে কিনা আমার লাইফে সেটা তার ব্যাপার। আমরা জোর করে কাউকে রাখতে পারি না। যে চলে যাওয়ার সে এমনেই যাবে আর যে থাকার সে এমনেই থাকবে"
যে জিনিস আমরা করতে পারি সেটা হলো মেনে নেওয়া। কেন হইলো, আমার সাথেই কেনো হইলো এগুলো সারাজীবনের প্রশ্ন। এগুলো যদি করি, করতে করতেই জীবন পার হয়ে যাবে। কপালে নাই মানে নাই, এটা এক্সেপ্ট করে এগিয়ে যাওয়া। বুক ফেটে গেলেও তাকে আর কিছু না বলা। আমার সাইকোলজির সাথে সবার মিলবে না সেটাও সত্য। কিন্তু আমার সাইকোলজি আমারই।
আমি আমার সাইকোলজি বোঝানোর চেষ্টা করলাম না। কান্না করা ব্যক্তিকে বাস্তবতা বোঝাতে হয় না।
অনেকে হয়তো মনে করতে পারে, ৭ বছর আগে হারানো প্রিয় মানুষটা কে?
আমার ভাই।